উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে বগুড়াকে বলা হয় সবজির ভান্ডার। শীতকালে প্রায় সব ধরনের সবজির ফলন হয় এ জেলায়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যায় রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে। ইতোমধ্যে চাষিদের উৎপাদিত শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে বাজারে। কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৩ লাখ টন সবজি উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। শীত ঘিরে বগুড়ায় চাষিরা সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় চাষিদেরও ঝোঁক বাড়ছে। আগে সবজি বাজারে তুললে বেশি দাম পাওয়া যায় এ আশায় চলছে খেত পরিচর্যা।
জেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের সবজি খেত। এর মধ্যে আছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, করলা, পটোল, পালং ও লালশাক। চাষিরা কেউ খেতে নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ তুলছেন ফসল, কেউ বাজারে বিক্রি করেছেন। সবজি চাষে তাদের উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। সদর উপজেলার বাঘোপাড়া খেলারঘর গ্রামের বেলাল হোসেন জানান, তিনি ১ বিঘা জমিতে আগাম জাতের বাঁধাকপির চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে প্রায় ৪০-৪৫ হাজার টাকা। বিক্রির আশা করছেন ৭০-৭৫ হাজার। তিনি বলেন, আগের তুলনায় খরচ বেড়ে গেছে। লাভ কম হচ্ছে। আমরা সবজির ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। পাইকাররা নানা অযুহাতে ফসলের দাম দিতে চায় না। অথচ তারা কৃষকদের কাছ থেকে কমমূল্যে সবজি কিনে বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছেন। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শীত আসার আগে চাষিরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন। জেলায় গত বছর ১৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে শীতের সবজি আবাদ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ২০ হাজার ২৮০ টন। চলতি মৌসুমে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৩ লাখ টন সবজি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চাষ ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে। গড়ে ৪০ টাকা কেজি ধরলে যার মূল্য ১১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।