উদ্বোধনের পর সাড়ে তিন বছর পার হলেও দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের রানীরবন্দর ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র চালু হয়নি। আধুনিক অবকাঠামো, বিভিন্ন সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে। ব্যবহার না হওয়ায় এসব যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে বসেছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর জনবল বরাদ্দ না দেওয়ায় এ অবস্থা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়ন ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নে রানীরবন্দর ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। ২০২২ সালের জুন মাসে এটি উদ্বোধন করা হয়।
নশরতপুর গ্রামের রশিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম বলেন, মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য সরকার কোটি টাকা খরচ করে হাসপাতালটি নির্মাণ করল, অথচ ডাক্তার-নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়নি। হাসপাতালটিতে ডাক্তার থাকলে আশপাশের হাজারো মানুষের উপকার হতো। আমরা চাই দ্রুত হাসপাতালটিতে ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হোক।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মশিউর রহমান বলেন, এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু হলে আশপাশের নশরতপুর, তেঁতুলিয়া ও আলোকডিহি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ উপকার পাবেন। হাসপাতালের আধুনিক ভবন, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ডাক্তারদের থাকার আবাসিক ব্যবস্থা সবই রয়েছে। কিন্তু এখানে একজন লোকবলও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়ে গর্ভবতী মা ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য রানীরবন্দরের বেসরকারি ক্লিনিক বা ১৫ কিলোমিটার দূরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে হয়। মশিউর রহমান আরও জানান, ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সপ্তাহে দুই দিন একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রাখা হয়েছে, যিনি জ্বর-সর্দিসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ প্রদান করেন। এদিকে এক বছরের বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় যে কোনো সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা যায়।
মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী বেলাল হোসেন বলেন, হাসপাতাল উদ্বোধনের পর থেকে আমি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করে আসছি। কিন্তু ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছি না, তাই সপ্তাহে এক দিন করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে চলে আসি। চিরিরবন্দর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরমান জনি বলেন, ১৬ জনের বিপরীতে কোনো জনবল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এমন অবস্থায় তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদায়ন করা হয়েছে। তিনি সপ্তাহে দুই দিন সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে থাকেন।