দেশে সুতা ব্যবসার জন্য বিখ্যাত নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার এলাকা। তবে এক বছর ধরে এর ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। অনেক স্পিনিং কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক কারখানা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। কর্মসংস্থান হারাচ্ছে শত শত শ্রমিক। শরীফ নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘আমি ১৮ বছর ধরে চাকরি করি। আমাদের এলাকায় দেড় শ ফ্যাক্টরি ছিল। এখন ২০টাও নেই। কাজের চাপ কমে গেছে। কিছুদিন পর কাজ করতে পারব কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’
হাফসা নামে এক নারী শ্রমিক বলেন, ‘আগে অনেক ওভারটাইম করতাম। এখন ওভারটাইম দূরের কথা, কাজই পাই না। আগে বেতন পাইতাম ৩০ হাজার টাকা, এখন পাই ১২ হাজার। এ টাকা দিয়ে সংসার চলে না।’ মেসার্স মুজিব এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার জয়দেব চন্দ্র সাহা বলেন, ‘ব্যবসার অনেক খারাপ যাচ্ছে। আমাদের কাজও অনেক কমে গেছে।’ বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. সিরাজুল হক হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। সুতার ব্যবসা গার্মেন্টসের ওপর নির্ভরশীল। অনেক গার্মেন্ট বন্ধ থাকায় এ ব্যবসায় প্রভাব পড়ছে। ৭০ পার্সেন্ট ব্যবসা নষ্ট হয়ে গেছে।’ মেসার্স মুজিব এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে এক তৃতীয়াংশ ব্যবসা কমে গেছে। দেশের অনেক মালামাল বাইরে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের কোটি কোটি টাকা বাকি পড়ে গেছে।’ বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম সোলাইমান বলেন, ‘এক বছর যাবৎ সুতার বাজার খুব খারাপ যাচ্ছে। এক্সপোর্টের ভয়াবহ অবস্থা চলছে। প্রায় ২০০ গার্মেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। গার্মেন্ট সেক্টরের সঙ্গে সুতার ব্যবসার সম্পর্ক রয়েছে। গার্মেন্ট সেক্টর ভালো না থাকলে আমরা সুতা বিক্রি করব কোথায়? এক্সপোর্ট ভালো না থাকলে গার্মেন্টসের ক্ষতি, আমাদেরও ক্ষতি। ৫ শতাধিক মালিক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। অনেক কারখানা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘ভারত আমাদের দেশে বন্ডের মাধ্যমে মাল ঢুকিয়ে দিচ্ছে; এতে আমাদের আরও ক্ষতি হচ্ছে। কোটি কোটি টাকার মালামাল ব্ল্যাকে বিক্রি করে দেয়। এর বিরাট প্রভাব পড়ছে।’