কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। বিভিন্ন অংশে প্রতিনিয়ত ঘটছে হতাহতের ঘটনা। চলতি বছরের ৫ নভেম্বর পর্যন্ত এ মহাসড়কে প্রাণ গেছে ৮৪ জনের। আহত হয়েছেন শতাধিক লোক। সড়কের অন্তত ২১টি পয়েন্ট ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। এর মধ্যে রামু, চকরিয়া, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও পটিয়ায় দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি। লবণবোঝাই ট্রাক, পর্যটকবাহী বাস, পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান সব ধরনের যানবাহন এই দুই লেনের সড়কে একসঙ্গে ছুটছে। দ্রুতগামী যানবাহনের ওভারটেকিং, পিচ্ছিল রাস্তা, রাতে আলো স্বল্পতা এবং অদক্ষ চালনা দুর্ঘটনার বড় কারণ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিআরটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৫ নভেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘটেছে ৮২টি দুর্ঘটনা। এতে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ১৩২ জন। এ মহাসড়ক প্রশস্ত করার দাবিতে কয়েক বছর ধরে আন্দোলন চলছে। সম্প্রতি লোহাগাড়া, কক্সবাজার, চকরিয়া, রামু, ঈদগাঁও ও পটিয়া এলাকায় হয়েছে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ ও গণসমাবেশ। এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট-১’ একনেকে পাস হয়েছে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। প্রথম পর্যায়ে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে চার লেনের বাইপাস ও একটি ছয় লেনের ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শ্যামল কুমার ভট্টাচার্য বলেন, প্রায় ২৩ দশমিক ৫২ কিলোমিটার অংশে বাইপাস ও ফ্লাইওভার নির্মাণে জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে পরামর্শক নিয়োগের টেন্ডার আহ্বান করা হবে। আশা করছি এক বছরের মধ্যে কাজ শুরু করা যাবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজারের পর্যটন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্থনীতি ও রোহিঙ্গা শিবিরের ত্রাণ কার্যক্রম- সবকিছুই এ সড়কনির্ভর। এটি ছয় লেনে উন্নীত করা সময়ের দাবি নয়, জীবনরক্ষার দাবি। সড়কটি প্রশস্ত হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে। সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে জানিয়ে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘জাইকার সহযোগিতায় বাস্তবায়নের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ পর্যায়ে এসেছে।’ স্থানীয়দের ছয় লেন দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে বলা যাবে এটি চার লেন হবে নাকি ছয় লেন হবে।