গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ঘাঘট নদী পারাপারে তিনটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা নড়বড়ে কাঠের সাঁকো। অনেক স্থানে ভেঙে যাওয়ায় এটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মাঝেমধ্যেই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। বিকল্প না থাকায় এ এলাকার মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। এতে কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে স্কুলশিক্ষার্থী, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। যে কোনো মুহূর্তে এখানে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের নারায়ণপুর এলাকায় এই সাঁকো দিয়ে ঘাঘট নদীর পারাপার হয় কুপতলা, খোলাহাটি ও বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ২০ হাজারের বেশি মানুষ ও বিভিন্ন যানবাহন। পুরাতন সাঁকোটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঠ দিয়ে তৈরি সাঁকোটি বেশ নড়বড়ে ও সরু। কয়েকটি খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, যা ঝুঁকিপূর্ণ। রেলিং নড়বড়ে হওয়ায় হাঁটাচলাও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচলের সময় এক লাইনে চলতে হয়।
স্থানীয়রা জানান, এখানে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় সবিয়াল শেখ বলেন, বছর পাঁচেক আগে এলাকাবাসীর অর্থায়নে কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় সাঁকোটি। এবার বর্ষা মৌসুমে এটি ভেঙে যায়। তারপরও বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে স্থানীয় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া, আল মামুনসহ অনেকে বলেন, পারাপার হতে গেলে এ সাঁকো কেঁপে ওঠে। খুব ভয় লাগে। কখন পড়ে যাই, সেই ভয় নিয়ে পারাপার হতে হয়।
কৃষক আনছার আলী ও শাহিন মিয়া বলেন, কৃষিপণ্য হাটবাজারে নিয়ে যেতে কষ্ট হয়। একটি সেতুর অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হয়ে আসছি। বিকল্প পথ না থাকায় বাধ্য হয়েই এই পথেই যেতে হয়।
বল্লমঝাড় ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান বলেন, এখানে সেতুর জন্য একাধিকবার এলজিইডিকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সেতু নির্মাণ করা হলে এ এলাকার মানুষের দুর্ভোগ যেমন কমবে, পাশাপাশি শিক্ষা কৃষি ও অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রসার ঘটবে।
গাইবান্ধা এলজিইডি নির্বাহী প্রকোশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, সেতু নির্মাণে কিছু নিয়মনীতি থাকে। সে মোতাবেক সব ঠিক থাকলে ওই স্থানে সেতু নির্মাণ করা হবে।