জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, রাজস্ব আহরণ হচ্ছে মধু আহরণের মতো। এ কারণে করদাতাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাকে সোনার ডিম পাড়া হাঁসের মতো মেরে ফেললে তো হবে না। হয়রানি বা জুলুম করা যাবে না। গতকাল এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে ভ্যাট দিবস উপলক্ষে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ভ্যাটের প্রবৃদ্ধি ২০১২ সালে এসে ধাক্কা খায়। নতুন আইন ১৯৯১ সালের আইনের চেয়ে সহজ হওয়ার কথা থাকলেও বরং আরও জটিল হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দেন না বরং জনগণের কাছ থেকে ভ্যাট সংগ্রহ করেন।
ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দেয় না, তারা শুধু কালেক্টর। এটি সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আয়করে বড় ধরনের লিকেজ রয়েছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, রাজস্বর বড় অংশ আসা উচিত আয়কর থেকে, এরপর ভ্যাট আর কাস্টমস থেকে সবচেয়ে কম। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত হারে আদায় বাড়ছে না। রাজস্ব আহরণের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ডিজিটালাইজেশন। ৩২ বছর পরও ওই জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। ব্যয় বেশি হলে, আয় কম হলে, ঋণ বেড়ে যায়। এটা যেমন পরিবারের জন্য সত্য, দেশের জন্যও প্রযোজ্য। গতকাল এই বিষয়টি বলেছিলাম, কিন্তু মিডিয়ায় ভুলভাবে এসেছে। মূল কথা রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে।
এদিকে সেমিনারে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিদেশি ঋণ ‘স্বপ্নের পোলাও’ খাওয়ার মতো নয়। বাইরে থেকে ঋণ নিলে তার সঙ্গে নানা শর্ত জুড়ে দেওয়া থাকে। ধার নিয়ে বেশি দূর এগোনো যায় না। তাই এখন আমাদের নিজস্ব বা অভ্যন্তরীণ সম্পদের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের জিডিপির তুলনায় কর আদায়ের হার (ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও) অত্যন্ত কম। বিদেশি ঋণ বা অনুদান নিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য বা সামাজিক উন্নয়নের মতো খাতগুলোতে কাজ করতে গেলে নমনীয়তা থাকে না। কিন্তু নিজস্ব সম্পদ থাকলে আমরা আমাদের অগ্রাধিকারভুক্ত কাজগুলো স্বাধীনভাবে করতে পারি। এটা দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমরা পারি না। অতএব রাজস্ব বাড়াতে হবে।