ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম. শফিকুল আলম তার চাকরিজীবনের প্রায় ৫৪ শতাংশ সময় ছুটি কাটিয়েছেন। ২২ বছরের মধ্যে, প্রায় ১২ বছর (৩৩০১ দিন) তিনি নিয়মমাফিক বা অর্জিত ছুটি ভোগ করেছেন এবং ৯৭৪ দিন অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত ছিলেন।
২০১০ সালে ফিনল্যান্ডে পিএইচডি করার জন্য তিনি ছুটি নেন শফিকুল আলম এরপর দীর্ঘ সময় সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। ২০২৩ সালের ১ মার্চ কর্মস্থলে যোগদানের কথা থাকলেও তিনি যোগদান করেননি। এ কারণে নভেম্বর ২০২৩ থেকে তার বেতন স্থগিত করা হয়েছে।
ইবি প্রশাসন ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার ছুটি বিষয়ক তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করলেও, দশ মাস পেরিয়ে গেলেও প্রতিবেদন জমা হয়নি।
এ বিষয়ে শিক্ষক সেলের উপ-রেজিস্ট্রার এনামুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি পহেলা মার্চ ২০২৩ সাল থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তার পূর্বের ছুটির পদ্ধতিগত বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, পূর্ববর্তী সব প্রশাসন তার ছুটি মঞ্জুর করার কারণেই এত দীর্ঘ সময় সে ছুটি ভোগ করেছেন। যতদূর জেনেছি এই ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ‘তিনি যে প্রক্রিয়ায় একাধিক বার ছুটি নিয়েছেন সেটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি নয়। আমরা খুব দ্রুতই একটি মিটিং করে উপাচার্যকে সিদ্ধান্ত জানাবো।’
লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম বলেন, ’আমাদের বিভাগে এমনিতেই শিক্ষক সংকট রয়েছে। উনার মতো একজন একাডেমিশিয়ানের সহযোগিতা পেলে বিভাগটি আরও উন্নত হতো। আশা করি তিনি জয়েন করবেন।’
অভিযুক্ত শিক্ষক ড. এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি ফিনল্যান্ডের নাগরিকত্ব পেয়ে সেখানে স্ত্রী-বাচ্চাসহ অবস্থান করছেন বলে জানান। তিনি বলেন, গত বছর আমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আমি দেশে ফিরতে পারিনি। আগামী সপ্তাহে সর্বশেষ মেডিকেল চেকআপ আছে। সেটার পর ডিসেম্বরে দেশে ফিরে আমি চাকরি থেকে রিজাইন দিতে চাই। আমার বর্তমান শারীরিক অবস্থা অনেক খারাপ। ছাত্রদের টিচিং করানোর মতো সামর্থ্য নেই আমার।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘আমরা কয়েকমাস আগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটি প্রতিবেদন দিলেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিডি-প্রতিদিন/সুজন