আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ভুল তথ্যে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি ও জিএস প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
(মঙ্গলবার) জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’। এর ভিপি প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রশিবিরের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম। আর সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ হয়েছেন জিএস প্রার্থী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জকসু নির্বাচন কমিশন গভীরভাবে লক্ষ্য করছে যে, আপনার সমর্থিত প্যানেলের পক্ষে গত ২৭ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল ক্যাম্পাসে একটি সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সাংবাদিক সম্মেলনে আপনার প্যানেলের কতিপয় প্রার্থীসহ আরো অনেকে জকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারবৃন্দ ও জবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা রকম উস্কানিমূলক, বিভ্রান্তকর ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন। আপনার এহেন আচরন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদসমূহের গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা ২০২৫ ও জকসু নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ২০২৫ সুস্পস্ট লঙ্ঘন। আপনাদের এই আচরণ অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তাদের আচরণের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা আগামী ০৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিকট লিখিতভাবে জবাব দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শোকজের বিষয়ে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমত, ওই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সকালে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছিলাম। দ্বিতীয় বিষয় হলো নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বাস দেওয়া যাবে কি? তারা আমাদের জানিয়েছিল ক্যাম্পাসের ভেতরে দেওয়া যাবে না। তৃতীয় বিষয় হলো আমরা আচরণবিধি মেনে বাস দিয়েছিলাম। আমরা নিয়ম মেনে ক্যাম্পাসের বাইরে বাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। এ ক্ষেত্রে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হওয়ার কথা নয়।’
শোকজের বিষয়ে আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, ‘আমরা কখনোই এমন কোনো বক্তব্য উপস্থাপন করিনি, যার পক্ষে আমাদের কাছে তথ্য–উপাত্ত ও যৌক্তিক ভিত্তি ছিল না। যুক্তি ও প্রমাণের আলোকে আমরা স্পষ্টভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরেছি। নির্বাচন কমিশনার আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছেন— আমরা সেগুলোকে অস্পষ্ট ও অসংগত বলে মনে করছি। তবুও আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমিশনের পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব প্রদান করব। আমরা আশা করি, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব এবং যথা সময়ে শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন বাস্তবায়ন করতে হবে।
জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, আমরা এর আগে ছাত্রদলের দুই প্রার্থীকেও শোকজ দিয়েছি আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনের জন্য। আজ শিবিরের দুইজনকেও একইভাবে কমিশনের বৈঠকে সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ শোকজ দেয়া হয়েছে। আশাকরি সবাই নির্বাচনী নিয়মকানুন মেনে চলবে আগামীতে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম