চেনা আবাহনী এ কী রূপ ধারণ করেছে? ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা যাদের কাছে মামুলি ছিল, তারাই কি না হতাশার বৃত্তে আটকে গেছে। ১৯৭২ সালে অভিষেকের পর বাংলাদেশে সর্বোচ্চ লিগ জেতার কৃতিত্ব তাদের। ফেডারেশন কাপেও সাফল্যের দিক দিয়ে এগিয়ে আছে। ঢাকার সেই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব কি না তিন বছর ধরে কোনো ট্রফি জিততে পারছে না। এমনটি হওয়ার কথা নয়। শক্তিশালী দল গড়া হচ্ছে, বাছাই করে বিদেশি আনা হচ্ছে। তার পরও জনপ্রিয় দলটি থমকে গেল কেন? সমস্যাটা কোথায়? অন্যান্য দলে কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কিংবা গ্রুপিং থাকলেও ঢাকা আবাহনীর বেলায় তা কখনো শোনা যায়নি। ২০০৭ সালে দেশে পেশাদার ফুটবল প্রচলনের পর একবার হ্যাটট্রিক শিরোপাসহ সর্বোচ্চ ছয়বার লিগ জেতার কৃতিত্ব তাদেরই। ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপেও দাপটের স্বাক্ষর রেখেছে। তিন বছরে হঠাৎ ছন্দপতনে দলের সমর্থকরা বিস্মিত। হতে পারে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর যে কোনো কারণে দলটি বড় ধাক্কা খেয়েছে। এ তো তাদের একার নয়, প্রায় প্রতিটি ক্লাবই নানা সমস্যায় জর্জরিত। কারও কারও আবার নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। আবাহনী যে এলোমেলো হয়ে গেছে তা তো নয়। ধাক্কা খেলেও শিরোপা জেতার মতো দল ঠিকই গঠন করতে পারবে। জাতীয় দলে তো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খেলোয়াড় তাদেরই। নতুন মৌসুমে বসুন্ধরা কিংস ও আবাহনী সমান মানের সেরা দল গড়েছে। গতবার ফেডারেশন কাপ ফাইনালে খেলতে পারেনি বলে মৌসুমের প্রথম ট্রফি চ্যালেঞ্জ কাপে খেলা সম্ভব হয়নি। অন্যান্য আসরে তো তাদের চেনা রূপে দেখার কথা। তা কি হচ্ছে? চলতি বাংলাদেশ ফুটবল লিগে তিনটি করে ম্যাচ হয়েছে। অথচ এরই মধ্যে দুটি হার ও একটি ড্র করে আট পয়েন্ট হারিয়েছে আবাহনী। তিন ম্যাচ দিয়ে লিগের কোনো কিছুই পর্যালোচনা করা ঠিক হবে না। কিন্তু শুরুতে আট পয়েন্ট হারালে সামনে তো আরও বড় বাধা আছে। তা কি টপকাতে পারবে আবাহনী। আগের দুই ম্যাচে ব্রাদার্স ও মোহামেডানের কাছে হারার পর আবাহনী আজ চতুর্থ ম্যাচে নামছে। কুমিল্লায় তাদের প্রতিপক্ষ পুলিশ এফসি। আজ কি সাবেক চ্যাম্পিয়নরা লিগে প্রথম জয় পাবে? এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
কেননা দল হিসেবে পুলিশও কম যাবে না। তিন ম্যাচে তারা এক জয় ও দুই ড্রয়ে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে। অন্যদিকে জয়হীন আবাহনী এক পয়েন্টে আটে অবস্থান করছে। হয়তো এ বিপর্যয় কেটে যাবে আবাহনীর। তবে তারা কত দূর যাবে, সেটাই প্রশ্ন। শুরুতেই আট পয়েন্ট হারানোটা বড় ধাক্কা। টানা ছয় মৌসুমে লিগে শিরোপা নেই তাদের। এবার যদি সাতে গিয়ে ঠেকে, তা তো সমর্থকদের জন্য বড় হতাশার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজেটে গড়া আবাহনীর মৌসুমটা কেমন যায়, তা এখন দেখার বিষয়।