উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি- স্লোগানে গতকাল দিনব্যাপী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অনুষ্ঠিত হয় প্রজাপতি মেলা। ক্যাম্পাসে ঝুলানো হয় ব্যানার-ফেস্টুন, পোস্টার। ছুটির দিনে মৃদু শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকেই প্রজাপতিপ্রেমীরা ছুটে আসেন মেলায়। হরেক রকমের প্রজাপতি দেখতে ভিড় জমান তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন চত্বরে এ মেলার আয়োজন করে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ‘কীটতত্ত্ব’ শাখা। ২০১০ সাল থেকে ব্যতিক্রমী এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মেলায় তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রচনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির আদলের ঘুড়ি ওড়ানো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। পাপেট শো, বারোয়ারি বিতর্ক এবং প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে এবং প্রজাপতি পার্কে জীবন্ত প্রজাপতি দেখার ব্যবস্থা রাখা হয়।
এবারের মেলায় প্রকৃতি সংরক্ষণে অবদানের জন্য বন্যপ্রাণী বিশারদ ও সংরক্ষণবিদ ড. আলী রেজা খানকে বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। বাটারফ্লাই ইয়াং এনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় জাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী নুরে আফসারী ও শাহরিয়ার রাব্বি তন্ময়কে।
মেলা উদ্বোধন করেন জাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। এ সময় তিনি প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রজাপতিসহ সব প্রাণীর প্রতি আমাদের মানবিক ও যথাযথ আচরণ করতে হবে। মানুষ হিসেবে আমাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। এসব প্রাণী আমাদের ওপর নির্ভরশীল। কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে যথাযথ টেকসই উন্নয়নের উপাদান ব্যবহার করতে হবে। তাহলে এসব প্রাণীর ওপর যথাযথ আচরণ করা হবে। প্রজাপতি মেলার আহ্বায়ক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রজাপতি শনাক্ত করার জন্য আমরা মলিকুলার ডেটা তৈরি করেছি। বাংলাদেশের মতো একটি সীমাবদ্ধ সম্পদের দেশেও আমরা এটা করতে পেরেছি। আসুন আমরা সচেতন হই, প্রজাপতি ও প্রকৃতিকে ভালোবাসি এবং সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাকসু ভিপি আবদুর রশিদ জিতু, জিএস মো. মাজহারুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।