পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী হেলিকপ্টারে করে বনগাঁ যাওয়ার কথা ছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু বিমান সংস্থার লাইসেন্স-সংক্রান্ত ত্রুটির কারণে হেলিকপ্টারটি উড়তে না পারায় শেষ পর্যন্ত সড়কপথেই অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছাতে হয় তাঁকে।
মঙ্গলবার তিনি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁয় ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নেন। পরে ত্রিকোণ পার্কে এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন এবং অনুষ্ঠান শেষে চাঁদপাড়া থেকে ঠাকুরনগর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার পদযাত্রায়ও অংশ নেন।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগের দিন (সোমবার) হেলিকপ্টারটির মহড়া হয়েছিল। কিন্তু তখন লাইসেন্সজনিত কোনো সমস্যার কথা জানানো হয়নি। সফরের ঠিক আগে মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয় যে হেলিকপ্টারটি উড়তে পারবে না।
এ ঘটনায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বনগাঁর সভায় তিনি বলেন, “প্রথমেই ক্ষমা চাইছি, আমার আসতে একটু দেরি হয়েছে। এর পেছনে কিন্তু একটা মজা আছে। বহু মাস আমি হেলিকপ্টার ব্যবহার করি না। আজ একাধিক অনুষ্ঠান থাকায় হেলিকপ্টার নেওয়া হয়েছিল। আমার ১২টায় বের হওয়ার কথা ছিল। হঠাৎ খবর এলো, হেলিকপ্টার যাবে না। নির্বাচন তো শুরুই হয়নি, তার আগেই সংঘাত শুরু হয়ে গেল!”
তিনি আরও বলেন, “আমি রাস্তায় আসতেই মানুষের সঙ্গে প্রচুর দেখা হয়েছে। অনেক এলাকা ঘুরে এসেছি। জনসংযোগটা বরং আরও ভালো হলো।”
বিজেপিকে লক্ষ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি বিজেপিকে বারবার বলি— ওরে, আমার সঙ্গে খেলতে যাস না। আমি যে খেলাটা খেলব, সেই খেলায় তোমরা আমাকে ধরতেও পারবে না, ছুঁতেও পারবে না, নাগালও পাবে না। কোটি কোটি টাকা খরচ করো, মানুষ টাকা নেবে কিন্তু ভোট দেবে না।”
নিজের রাজনৈতিক সংগ্রামের কথা স্মরণ করে মমতা যোগ করেন, “আমি ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি। যা ধরি শেষ না করা পর্যন্ত ছাড়ি না। সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফেরানোর জন্য ২৬ দিন অনশন করেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পিছু হটি নাই। তাই আমার হেলিকপ্টার বাতিল করুন, সড়ক বন্ধ করুন, যা ইচ্ছে করুন— আমার কিছু যায় আসে না। জীবনে যেমন লড়াই করে চলেছি, পথই আমাকে পথ দেখাবে।”
বিডি প্রতিদিন/হিমেল