তিন দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। গতকাল সকালে তাঁরা এ কর্মবিরতি শুরু করেন। বিদ্যালয় খোলা থাকলেও কোনো ক্লাস হচ্ছে না। এদিকে চার দফা দাবি আদায়ে ১ ডিসেম্বর থেকে শাটডাউনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিন দফা দাবিতে ৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি ও শাহবাগে কলম সমর্পণ কর্মসূচিতে পুলিশের অতর্কিত হামলায় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। পরদিন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত তিন দফার মধ্যে ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারি ও অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি না হওয়ায় সংগঠনের পূর্বঘোষিত ৩০ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি কর্মসূচি পরিবর্তন করে বৃহস্পতিবার থেকে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি চলবে।
এ বিষয়ে সংগঠনের নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের বেতন আপাতত ১১তম গ্রেড করাসহ অন্যান্য দাবি মানলে কর্মবিরতি স্থগিত করা হবে। না হয় কর্মবিরতি চলবে। এমনকি আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষাও এ কর্মসূচির আওতায় থাকবে।’
সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হচ্ছে সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে নির্ধারণ; ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতার অবসান এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।
এদিকে দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, দ্রুত স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠনসহ চার দাবি আদায়ে সরকারকে রবিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হলে পরদিন থেকে বিদ্যালয় শাটডাউনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। গতকাল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে ‘সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র ব্যানারে তাঁরা এ হুঁশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন মাহমুদ সালমী বলেন, ‘বর্তমান বাস্তবতায় দশম গ্রেডের বেতনে শিক্ষকরা হিমশিম খাচ্ছেন। তাই আমরা চাই সহকারী শিক্ষক পদটি নবম গ্রেডে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত করে দ্রুত সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠন করে গ্রেজেট প্রকাশ হোক। দাবি আদায় না হলে আগামী সোমবার থেকে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা, ভর্তিকার্যক্রমসহ সব ধরনের কার্যক্রম বর্জন করে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে কমপ্লিট শাটডাউন পালন করব।’ মাধ্যমিক শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো শিক্ষকদের দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ; দ্রুত স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠন; বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন; সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ প্রদান।