গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর অবৈধ গর্ভপাত করানোর ঘটনায় যমজ দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগী পরিবার পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের তালুক জামিরা হাজীপাড়া গ্রামের তৌহিদুল ইসলামের ছেলে স্বপন মিয়া (২২) ও একই গ্রামের মাহাবুব রহমানের মেয়ে মনি আকতারের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে মনি আকতার প্রেমের টানে পালিয়ে গিয়ে স্বপনকে বিয়ে করেন। তবে মেয়ের পরিবার বিয়েটি মেনে নেয়নি এবং স্বপনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করে। পরে আপসের উদ্যোগে দুই পরিবার মনি ও স্বপনকে বাড়িতে নিয়ে আসে। উভয় পরিবারের সম্মতিতে ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী তাদের পুনরায় বিয়ে সম্পন্ন হয়। এরপর দম্পতি ঢাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। কিছুদিন পর মনি আকতার অন্তঃসত্ত্বা হন।
সম্প্রতি গর্ভাবস্থার সাত মাসে মনি আকতারকে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে পরিবার তাকে আলট্রাসোনোগ্রাম করানোর কথা বলে গাইবান্ধা শহরে নিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, মনির ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়। এতে সাত মাস বয়সী দুই কন্যাশিশুর জন্ম হয়—একটি মৃত অবস্থায় এবং অন্যটি জন্মের পরপরই মারা যায়।
ঘটনাটি ২৮ নভেম্বর ঘটলেও একটি মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে নবজাতকদের দাদি হাছিনা বেগম পলাশবাড়ী আমলী আদালতে মামলা করেন।
মামলার বাদী হাছিনা বেগম বলেন, আমার ছেলে স্বপন ঢাকায় চাকরি করে এবং স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই থাকত। মনির পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি বলেই অবৈধভাবে গর্ভপাত করিয়েছে। নিষ্পাপ দুটি শিশুকে পৃথিবীর মুখ দেখতে দেওয়া হয়নি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার চাই।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদিপক্ষের আইনজীবী ও জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি মাসুদুর রহমান বলেন, ছেলের মা বাদি হয়ে পলাশবাড়ী আমলী আদালতে মামলা করেছেন। আদালত পলাশবাড়ী থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল