মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারে দুজন নিম্ন আয়ের দোকানির ওপর পড়েছে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের বোঝা। সাধারণ বিদ্যুৎ ব্যবহারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এই বিল পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। ঘটনার পর পুরো বাজারজুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, জরাজীর্ণ একটি দোকানঘর ভাড়া নিয়ে চা-পান ও নিত্যপণ্যের ব্যবসা করেন বাদশা ব্যাপারী। দোকানে একটি বাতি ও একটি ফ্যানই তার একমাত্র বিদ্যুৎ ব্যবহারের উৎস। মাসে সর্বোচ্চ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বিল আসত। কিন্তু চলতি মাসে তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিল। বিল দেখে স্তব্ধ হয়ে যান তিনি।
একই বাজারে ছোট খাবারের দোকানের মালিক শহীদ খানও পড়েছেন একই দুর্ভোগে। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত তার বিদ্যুৎ বিল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে থাকে। অথচ এ মাসে তার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা।
বাদশা ব্যাপারী বলেন, এটা তো অসম্ভব। আমার দোকানে এত ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলেছে।
শহীদ খান বলেন, বিলটা হাতে নিয়ে প্রথমে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এত বড় বিল আসার কথা না। এভাবে গেলে দোকানটাই বন্ধ করে দিতে হবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে বাজারে নিয়মিত ভুতুড়ে বিল আসছে। তারা মনে করছেন মিটার রিডিং কিংবা বিলিং সিস্টেমে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব নির্ধারণের দাবি তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস জানান, সংশ্লিষ্ট দুই গ্রাহককে একাধিকবার অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ওরা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।
টঙ্গীবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসার (ডিজিএম) মো. আব্দুস ছালাম বলেন, মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা বিষয়টি সরেজমিনে দেখে দ্রুত সমাধান করার পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এদিকে বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, দোকানিদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এ ধরনের অস্বাভাবিক বিল ভোক্তা হয়রানির উদাহরণ। দ্রুত তদন্ত, সঠিক বিল নির্ধারণ এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিডি প্রতিদিন/কেএইচটি