রংপুরে বড় উদ্যোক্তার অভাব ও তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে গলদা চিংড়ি চাষ হোঁচট খাচ্ছে। গলদা চিংড়ি নোনাপানির মাছ—এ ধারণা পাল্টে দিয়ে কয়েক বছর আগে রংপুর বিভাগের ৪টি সরকারি খামারে উৎপাদন শুরু হয়েছিল এই মাছের পোনা।
বর্তমানে একটি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। বিগত বছরে পোনা থেকে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার মাছ পাওয়া গেলেও বর্তমানে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় যেতে পারছে না।
রংপুর বিভাগীয় মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি, দিনাজপুরের পার্বতীপুর-বীরগঞ্জ উপজেলা ও কুড়িগ্রাম সদরে গলদা চিংড়ির পোনা উৎপাদনে খামার গড়ে তোলা হয়েছিল। বর্তমানে বীরগঞ্জের খামারটি বন্ধ রয়েছে। সাতক্ষীরা-খুলনার চাষিরা ছাড়াও স্থানীয় চাষিরা খামার থেকে পোনা নিয়ে নিজস্ব পুকুরে চাষ করে বাজারে বিক্রি করেন। গত ২০২৩-২৪ বছরে তিনটি খামারে ৯ লাখ ৬০ হাজার গলদা চিংড়ির পোনা উৎপাদন হয়েছে। মাঠপর্যায়ে চাষিরা ছোট সাইজের প্রতি পিস পোনা এক টাকা পঞ্চাশ পয়সা এবং বড় সাইজের পোনা ৫ টাকা দরে ক্রয় করছেন খামার থেকে।
নোনাপানি ও স্বাদুপানির সঙ্গে খাপ খাইয়ে লার্ভা উৎপাদন করা হয়। দক্ষিণাঞ্চল থেকে নোনাপানি ও গলদা চিংড়ির মা মাছ এনে লার্ভা সংগ্রহ করে ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে পোনা (পিএল) উৎপাদন হয়। এটি মার্চ মাস থেকে উৎপাদন করা হয়। মার্চ মাসে রংপুর অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর থাকায় গলদা চিংড়ি চাষ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারছে না। মৎস্য বিভাগ এজন্য আবহাওয়াকেই দায়ী করেছে। গলদা চিংড়ি সাধারণত ১২-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভালো উৎপাদন হয়।
এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে অন্যান্য মাছ চাষে বড় বড় উদ্যোক্তা থাকলেও গলদা চিংড়ি চাষে রংপুরে বড় কোনো উদ্যোক্তা তৈরি হয়নি। ফলে গলদা চিংড়ি চাষ এই অঞ্চলে হোঁচট খাচ্ছে।
মৎস্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একসময় মনে করা হতো গলদা চিংড়ি শুধু নোনাপানির মাছ। কিন্তু সে ধারণা পাল্টে দিয়ে মৎস্য বিভাগ রংপুর বিভাগে এই মাছ উৎপাদন করলেও নানা কারণে মাছ চাষ ব্যাহত হয়েছে।
রংপুর বিভাগীয় মৎস্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, রংপুর অঞ্চলে গলদা চিংড়ি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বিভাগের ৩টি খামারে উৎপাদিত ছোট ও বড় সাইজের পোনা দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্যচাষিরা ছাড়াও স্থানীয়রা নিজেদের পুকুরে চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/কেএইচটি