আলুর রাজধানী খ্যাত মুন্সীগঞ্জের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে রবি মৌসুমের প্রস্তুতি এখন পুরোদমে চলছে। আড়িয়ল বিলসহ শ্রীনগর, টঙ্গীবাড়ি, সিরাজদিখান এলাকার মাঠে আলু, ধান ও শীতকালীন সবজির বীজতলা এবং জমি প্রস্তুতের কাজে নেমেছেন হাজারো কৃষিশ্রমিক। মৌসুমে শ্রমিকের সংকট থাকায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অসংখ্য শ্রমিক এসে ভিড় করছেন এসব এলাকায়। আর সেই সুযোগেই স্থানীয় হাটবাজারে ভোরের আলো ফুঁটার আগেই বসছে ব্যতিক্রমী শ্রম বিক্রির হাট।
শ্রীনগর চকবাজার সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার হিসেবে পরিচিত। ফজরের আজানের পরপরই জোড়া সেতু এলাকায় শতশত শ্রমিক দাঁড়িয়ে থাকেন কাজের অপেক্ষায়। জমির মালিকরা এসে দরদাম করে পছন্দমতো শ্রমিক ঠিক করেন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। দিনে তিন বেলা খাবারসহ ৬০০–৭০০ টাকা মজুরিতে বেশিরভাগ শ্রমিক চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আড়িয়ল বিলের পানি নামতে শুরু করেছে। মাঠ পরিষ্কার, বীজতলা তৈরি, জমি চাষ—সব মিলিয়ে শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়েছে। তবে খাল-জলাশয় ও কালভার্ট এলাকার অনিয়মিত ভরাটের কারণে পানি নিষ্কাশন ধীরগতির হওয়ায় অনেক জমি এখনও জলমগ্ন। পানি পুরোপুরি নামলে শ্রমবাজার আরও জমে উঠবে বলে জানান স্থানীয়রা।
শ্রম বিক্রি করতে আসা শ্রমিকরা বলেন, বছরের এই সময়টায় তারা কয়েক মাস কৃষিকাজ করে বাড়ি ফিরে যান। চাপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন অনেকেই। কেউ আবার পরিচিত গৃহস্থের জমিতে সরাসরি যুক্ত হন।
উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জে এবার প্রায় ৩৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে ধান এবং প্রায় ২৩০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আবাদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা হাজারো কৃষিশ্রমিক।'
বিডি প্রতিদিন/আশিক