রাজশাহী নগরীতে ভরাট হয়ে যাওয়া একটি পুকুর পুনঃখনন শুরু করেছে প্রশাসন। নগরীর মোল্লাপাড়া মৌজায় ৬৩ শতাংশ আয়তনের পুকুরটি কয়েকদিন ধরে ভরাট চলছিল। ইতোমধ্যে পুকুরটির সিংহভাগ ভরাট করে ফেলা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে অভিযানে যান। খবর পেয়ে আগেই পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িতরা পালিয়ে যান।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আ. ন. ম. বজলুর রশীদ। এসময় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক তাছমিনা খাতুন বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে ছিলেন।
পুকুরপাড়ে গিয়ে বিভাগীয় কমিশনার নির্দেশ দেন, পুকুরটি আগে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এরপর খননযন্ত্র দিয়ে ভরাট করা মাটি তুলে পুকুরটি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়। পুকুর পুনঃখনন না হওয়া পর্যন্ত সেখানে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খাইরুল ইসলাম খোকন ও মাহমুদুল হাসান নামের দুই ব্যক্তি পুকুরটির মালিক। সম্প্রতি পুকুরটি ভরাট শুরু করেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। স্থানীয়রা বিষয়টি গত শুক্রবার বোয়ালিয়া থানার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) আরিফ হোসেনকে জানান। এরপর তিনি গিয়ে সবাইকে সতর্ক করে আসেন। কিন্তু শনিবার থেকে পুরোদমে ভরাট কাজ চলতে থাকে। এ অবস্থায় স্থানীয়রা বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারকে অবহিত করেন। অভিযোগ পেয়ে বিভাগীয় কমিশনার নিজেই ওই পুকুর উদ্ধার করতে যান।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। সিটি করপোরেশন এলাকায় পুকুর ভরাট করা নিষিদ্ধ। তাই এ পুকুরটা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। এখানে যে ব্যয় হবে, সেটা আমরা পুকুর ভরাটকারীদের কাছ থেকে আদায় করব।
তিনি আরও বলেন, এই পুকুর ভরাটের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় আর কোনো পুকুর ভরাট হবে না। আমরা খবর পেলেই বন্ধ করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনব।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক তাছমিনা খাতুন বলেন, ‘এই পুকুর ভরাটের খবর পেয়েই বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আমরা স্পটে এসে কাউকে পাইনি। তারপরও যাদের নামে এ জমি আছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত মামলা করব। এরপর থেকে কেউ কোন পুকুর ভরাট করতে পারবে না।’
বিডি প্রতিদিন/নাজিম