শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে। শীতের যেসব সবজি রয়েছে তারমধ্যে অন্যতম ফুলকপি। আর ফুলকপির উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। সরবরাহ বাড়ায় দামও কিছুটা কমেছে। তবে কৃষকরা ফুলকপি এখন আর হাট-বাজারে না নিয়ে অস্থায়ী বাজারে বিক্রি করছেন।
নওগাঁ সদর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ডাক্তার মোড় নামক স্থানে অস্থায়ী বসেছে ফুলকপির হাট। প্রতি মন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা। দেড় ঘন্টার টোলমুক্ত এ হাটে বেচাকেনা চলে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় বরি মৌসুমে প্রায় ৯ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শাকসবজির চাষাবাদ হয়ে থাকে। এরমধ্যে ফুলকপি ১২০ হেক্টর। যা থেকে উৎপাদন হবে প্রায় ২ হাজার ১০০ টন।
জেলার মাঠে মাঠে রবি মৌসুমে শীতকালিন শাক-সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা। মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, সিম, পটল, বেগুন, মুলা, মরিচসহ বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি। ভাল ফলনের আশায় ক্ষেতে নানা পরিচর্চায় ব্যস্ত। প্রায় ১ মাস থেকে শীতকালীন সবজি হাট-বাজারে উঠেছে। তবে ফুলকপির উৎপাদন বেশি হওয়ায় সরবরাহ বেড়েছে।
সদর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ডাক্তার মোড় নামক স্থানে অস্থায়ী পাইকারি ফুলকপির হাট বসেছে। গত ১০ দিন থেকে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ হাটে বেচাকেনা শুরু হয়ে চলে ৭টা পর্যন্ত। ভ্যান, সাইকেল কেউ বা কাঁধে করে ফুলকপি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। তবে আগের দিন বিকেলে কৃষকরা ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে রাখেন। প্রতি মন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা। এ হাট থেকে শহরের দুরুত্ব ৪কিলোমিটার।
সদর উপজেলার চক-বালুভরা গ্রামের কৃষক মোতালেব হোসেন বলেন, ১৫ কাঠা জমিতে প্রায় ২২শ ফুলকপি চারা রোপন করেছি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। প্রতিপিস ফুলকপি ২৫ টাকা হিসেবে ৫৫ হাজার টাকা বিক্রির আশা। খরচ বাদে লাভ থাকবে অন্তত ৪০ হাজার টাকা।
হাঁপানিয়া গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, ১০ কাঠা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছি। ৫০ কেজি ফুলকপি এ হাটে নিয়ে এসে ১ হাজার টাকা মন বিক্রি করা হয়। ১৫ দিন আগে ১৮শ টাকা মণ বিক্রি হয়েছিল। হাটে বিক্রি করতে গেলে প্রতিপিসে ২ টাকা খাজনা (টোল) ও ১ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। সে হিসেবে এ হাটে খাজনা ও ভাড়া ছাড়াই বিক্রি করা কৃষকদের জন্য সুবিধা হয়েছে। বর্ষাইল গ্রামের পাইকারি ব্যবসায়ি শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকার ফুলকপি কেনা হয়। যা ট্রাক যোগো ঢাকায় পাঠানো হয়। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই ঘন্টার এ হাটে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ফুলকপি বেচাকেনা হয়। তবে দিন যতো যাবে ফুলকপির উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়বে। এতে দাম কিছুটা কমে আসবে৷ আগামী প্রায় ১মাস এ হাটে বেচাকেনা চলবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোমায়রা মন্ডল বলেন, ভালো দাম পাওয়ার অনেক কৃষক আগাম ফুলকপির আবাদ করেন। শুরুতে উৎপাদন কম থাকায় দাম ভালো পেয়ে লাভবান হোন। তবে উৎপাদন বাড়লে দাম কিছুটা কমে আসে। তারপরও বাজারে দাম ভাল আছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম