কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকদের জন্য জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল ১১৭৪ জন পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট ছাড়ে এমভি বারো আউলিয়া, এমভি কর্ণফুলী ও কেয়ারি সিন্দাবাদ। ঘাটে এসে পর্যটকদের স্বাগত জানান জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম, সদরের ইউএনও নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ। তারা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন তদারকি করেন। সরকার ঘোষিত ১২ দফা নির্দেশনা মেনে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য সেন্ট মার্টিনে রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকছে। জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রথম দিনের সব টিকিট আগেই বিক্রি হয়েছিল এবং তিনটি জাহাজে মোট ১১৭৪ জন যাত্রী দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হন। ম্যানুয়ালি টিকিট বিক্রি করায় কেয়ারিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জাহাজে ওঠা পর্যটক মনির আহমেদ বলেন, স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ভ্রমণে যাচ্ছি। সেন্টমার্টিন দ্বীপে একরাত থেকে পরদিন একই টিকিটে কক্সবাজারে ফিরে আসব। এর আগে কখনো সেন্টমার্টিন যাইনি, কেবল মানুষের মুখে শুনেছি। ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (স্কোয়াব)-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক প্রবেশ উন্মুক্ত হলেও রাত্রিযাপনে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে এতদিন জাহাজ চলাচল করেনি। এবার নুনিয়ারছড়া জেটি থেকে চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেয়েছে।
প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটক বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল ৭টায় জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়বে এবং পরদিন বিকাল ৩টায় কক্সবাজারে ফিরবে। টিকিট বাধ্যতামূলকভাবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজুল ইসলাম জানান, গত এক দশক ধরে পর্যটনই স্থানীয়দের প্রধান জীবিকা। যে কোনো সংকট সত্ত্বেও পর্যটকদের আতিথেয়তায় ঘাটতি রাখা হবে না। জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান বলেন, সেন্টমার্টিন আমাদের জাতীয় সম্পদ। পরিবেশ রক্ষা ও দায়িত্বশীল পর্যটনের স্বার্থে নির্দেশনা মেনে চলা সবার দায়িত্ব। প্রশাসন, জাহাজ মালিক ও সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত তদারকির মধ্য দিয়ে দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষা নিশ্চিত করা হবে।