বাংলাদেশে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) বা দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসীয় ব্যাধি বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। ধূমপান, বায়ুদূষণ ও বাড়ির ভিতরে বিভিন্ন উৎস থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া (ইনডোর স্মোক) সিওপিডির প্রধান ঝুঁকি। এটা একটি গুচ্ছ রোগ, যা ক্রনিক ব্রংকাইটিস, এমফাইসিমা ও ক্রনিক অ্যাজমার যে কোনো একটি, দুটি বা তিনটির সহাবস্থান। রোগটিকে একসঙ্গে বলে সিওপিডি। হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের পর পৃথিবীব্যাপী এটি মৃত্যুর তৃতীয় কারণ। বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ১২ দশমিক ৫ ভাগ সিওপিডিতে ভুগছে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ কোটি।
গতকাল বিশ্ব সিওপিডি দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন। ‘সিওপিডি : জনস্বাস্থ্যের গোপন সংকট’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) বক্ষব্যাধি (রেসপিরেটরি) বিভাগ। বিএমইউর শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এ সভায় বক্তব্য দেন বিএমইউর উপাচার্য ডা. শাহিনুল আলম, চেস্ট অ্যান্ড হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, বিএমইউর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মুজিবুর রহমান হাওলাদার, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল কাদের, কাজী মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, এনআইডিসিএইচের পরিচালক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বিএমইউর উপাচার্য ডা. শাহিনুল আলম বলেন, ‘জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে সিওপিডি প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় গাইডলাইন ও নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। সিওপিডি নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। গবেষণার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ ও রোগীদের প্রয়োজন এবং কল্যাণে কাজে আসে সে ধরনের গবেষণায় দৃষ্টি দিতে হবে।’
ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল বলেন, ‘সম্মিলিতভাবে কাজ করলে সিওপিডি প্রতিরোধ করা সম্ভব। এটি প্রতিরোধযোগ্য। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা এ রোগের বোঝা প্রায় অর্ধেক পর্যন্ত কমাতে পারব।’
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সিওপিডি প্রতিরোধে ধূমপান পরিহার, বায়ুদূষণ হ্রাসসহ সব ঝুঁকি মোকাবিলায় গুরুত্ব দিয়ে সমন্বিত ও জাতীয় পর্যায়ে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। গ্রামে রান্নার চুলা ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মায়েদের অবহিত করতে হবে।’