‘দুর্নীতি দমন কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুপারিশ বাদ দেওয়ায় গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে দুদককে ব্যবহার করার যে প্রবণতা, তা বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে টিআইবি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদকের জন্মলগ্ন
থেকে প্রতিষ্ঠানটি জন আস্থার সংকটে ভুগছে। ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষা ও প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের যে ইতিহাস, তা থেকে বেরিয়ে আসতে “বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি” ছিল কৌশলগতভাবে অত্যন্ত জরুরি। সরকার তা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে, এটি দুঃখজনক।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও এ প্রস্তাব বাদ দেওয়া সরকারের নিজের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা এবং স্ববিরোধী অবস্থানেরই প্রমাণ।’
টিআইবি বলছে, জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দলের সম্পূর্ণ ঐকমত্যসহ অন্তর্ভুক্ত এবং টিআইবির ধারাবাহিক অধিপরামর্শের ফলে এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতির পরও চূড়ান্ত অধ্যাদেশে তা বাদ দেওয়া শুধু হতাশাজনক নয়, সরকারের অভ্যন্তরে প্রায় সব ক্ষেত্রে সংস্কার-প্রতিরোধক মহলের ষড়যন্ত্রের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারের অভীষ্টের জিম্মিদশারও পরিচায়ক। ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও ১১টি সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা দুদককে জবাবদিহির বাইরে রাখার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলসহ সব দেশবাসীকে কি এই বার্তা দিতে চাইছেন যে, রাষ্ট্রসংস্কার কেবলই ফাঁকাবুলি-এ প্রশ্নও করছে সংস্থাটি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জন্মলগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে জন আস্থার সংকটে ভুগছে ও স্বার্থান্বেষী মহলের ক্রীড়নক হিসেবে ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষা আর প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, তা থেকে উত্তরণ ঘটাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ প্রস্তাবটি করা হয়েছিল। এ কমিটি কর্তৃক দুদকের কাজের ষাণ¥াসিক ভিত্তিতে পর্যালোচনা, গণশুনানি ও পরামর্শের মাধ্যমে দুদককে প্রকৃতার্থে একটি জবাবদিহিমূলক, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কৌশলগত সুপারিশটি অনুধাবনে সরকার ব্যর্থ হয়েছে; যা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের জন্য এটি স্ববিরোধী ও সংস্কার পরিপন্থি নজির।’