প্রকৌশলী ও স্থপতিরা ভবনের উপযুক্ততা নিশ্চিত না করে নকশায় স্বাক্ষর করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম। গতকাল এফডিসিতে অনুষ্ঠিত ‘ভবন মালিকদের দায়িত্বশীলতাই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে’ শীর্ষক এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ইতিপূর্বে যারা তথ্য গোপন ও জালিয়াতির মাধ্যমে একাধিক প্লট নিয়েছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কেরানীগঞ্জ, বসিলা, ডেমরাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাশয় ভরাট করে যেসব হাউজিং কোম্পানি অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মাণ করেছে তাদের ব্যাপারে রাজউকের অবস্থান কঠোর।
তিনি বলেন, রাজউকের চেয়ারম্যান হিসেবে আমার অবস্থান অনেকটা আসামির মতো। নগর পরিকল্পনা ও ভবন নির্মাণে রাজউকের ত্রুটিবিচ্যুতি ও দায় রয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত, মামলা, জেল-জরিমানা এমনকি ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এখন রাজউকের অবস্থান জিরো টলারেন্স।
রিয়াজুল ইসলাম বলেন, নকশা অনুমোদন ও তদারকি দুটোই রাজউক করে থাকে। এ ক্ষেত্রে তদারকির দায়িত্ব অন্য সংস্থাকে দিলে আরও যুক্তিযুক্ত ও কার্যকর হবে। ভূমিকম্প রোধে কেবল রাজউক নয়, সরকারের অনেক সংস্থার দায়িত্ব রয়েছে। ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পে কসাইটুলির ত্রুটিপূর্ণ ভবন মালিককে এখনো পাওয়া যায়নি। তবে ওই এলাকার ভবন মালিকরা তাদের সমস্যা সমাধানে রাজউককে সহযোগিতা করছেন। অবৈধ ভবন নির্মাণকারীদের বিদ্যুতের মিটার জব্দ করা হচ্ছে। এতে সুফল পাওয়া না গেলে মামলা ও ভবন ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ভূমিকম্পের ঝুঁকিপ্রবণ এ দেশে অচিরেই বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। ভূমিকম্প নিয়ে আমাদের আতঙ্ক আছে, কিন্তু সচেতনতা নেই। বর্তমান বিল্ডিং কোড সময়োপযোগী নয়। এটি আধুনিকায়ন করতে হবে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় শর্টটাইম এবং লংটাইম রোডম্যাপ করা জরুরি। তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলায় সচেতনতা তৈরিতে প্রচুর অর্থ খরচ করা হলেও প্রস্তুতিতে তেমন কোনো কাজ হয়নি।
ছায়া সংসদে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের বিতার্কিকদের পরাজিত করে শহীদ বীরউত্তম লে. আনোয়ার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মাসুদ করিম, সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম ও সাংবাদিক ড. শাকিলা জেসমিন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
