বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটময়। চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানিয়েছেন। গত দুই দিন ধরে তাঁর বেশ কয়েকটি রোগের জটিলতা বেড়েছে। বিশেষ করে ফুসফুস, কিডনির সমস্যাগুলো বেশি পরিমাণে বেড়েছে। তাঁর চিকিৎসায় দেশিবিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা চালাচ্ছেন। ৮০ বছর বয়সি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতাসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২৩ নভেম্বর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেদিনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় গতকাল বাদ জুমা সারা দেশে মসজিদে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করে বিএনপি। রাজধানীর নয়াপল্টন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় ও দোয়া শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। গত দুই দিন ধরে দেশনেত্রী আবার অসুস্থ হয়ে এবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত রাতে (বৃহস্পতিবার) ডাক্তাররা বলেছেন- তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটময়। সেজন্য আমরা দলের পক্ষ থেকে এই গণতন্ত্রের নেত্রী, গণতন্ত্রের মাতা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সারা দেশের জনগণের কাছে বাদ-জুমা দোয়া চেয়েছিলাম। শুক্রবার সারা দেশের মসজিদে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ আমরা এখানে নয়াপল্টন মসজিদে নামাজ আদায় করি।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সবাই বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া চেয়েছি। দোয়া চেয়েছি- আল্লাহ যেন তাঁকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে দেন। সুস্থ অবস্থায় আবার জনগণের মাঝে ফিরে এসে তাঁকে দেশের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দেন।
এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বড় অবদান রেখেছেন খালেদা জিয়া। তিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি কারাভোগ করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন।
গত ১৫ অক্টোবর তিনি এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। একদিন থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। তার আগে গত ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে ১১৭ দিন অবস্থান শেষে ৬ মে দেশে ফেরার পর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাচ্ছিলেন।
