জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সাজা বাড়াতে আপিল করবে প্রসিকিউশন। গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি শেখ হাসিনার আস্থা নেই উল্লেখ করে তার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী না থাকার ঘোষণা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি এই ঘোষণা দেন। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর তামীম বলেন, প্রসিকিউশন বা ডিফেন্স কে কবে রেজিস্ট্রার অফিস থেকে রায় সংগ্রহ করবে, এটা তাদের ব্যাপার। প্রসিকিউশন রায় সংগ্রহ করেছে। তাতে দেখা গেছে, একটি অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আরেকটি অভিযোগে এই দুজনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রসিকিউশন রায় পর্যবেক্ষণ করছে। চিফ প্রসিকিউটর ও জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটররা দেখছেন। প্রসিকিউশন প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে, সেটির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে আপিল করা হবে। এই শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করার আবেদন করা হবে। ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করা হবে বলেও তিনি জানান।
হাসিনার রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী থাকছেন না পান্না : আইনজীবী জেড আই খান পান্না ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘এখন যেটা দেখলাম যে, মাননীয় শেখ হাসিনারও এই আদালতের প্রতি আস্থা নেই। যে আদালতের প্রতি বঙ্গবন্ধু কন্যার আস্থা নেই, সে আদালতে তো আমি তাকে ডিফেন্ড করতে পারি না; উচিত না, অনৈতিক।’ পান্না জানান, ‘আমি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পাইনি, আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ পেলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব। না পেলে এটাই আমার সিদ্ধান্ত, আমি ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় দাঁড়াব না।’
জেড আই খান পান্না বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এসেছে। আমি ট্রাইব্যুনালে ফজলুর রহমানের পক্ষে শুনানি করব।’
তিনি বলেন, এই বিচারের প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বহু আন্তর্জাতিক সংগঠন তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে। আর আদালতে যদি আমি নির্বিঘ্নে ডিফেন্ড না করতে পারি, তাহলে তো সেখানে আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত হয়ে কোনো লাভ নেই।’
এর আগে গুমের অভিযোগে করা পৃথক দুই মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। জেড আই খান পান্না ইচ্ছা জানানোর পরই তাকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দেন ট্রাইব্যুনাল। শেখ হাসিনার সঙ্গে ওই দুই মামলায় আসামি সেনা কর্মকর্তারাও।