ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনেও বিরাজ করছে আমেজ। চলছে রদবদলসহ নানান প্রস্তুতি। মাঠপর্যায়ে নতুন কর্মকর্তা পাঠানো হচ্ছে। এরই মধ্যে ভোটের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে গেছেন ৫০ জেলা প্রশাসক (ডিসি)। দেড় শতাধিকের মতো উপজেলায় যাচ্ছেন নতুন নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। বিতর্ক এড়াতে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) নির্বাচন করা হচ্ছে লটারির মাধ্যমে। জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ফেব্রুয়ারিতে ভোট হলে ডিসেম্বরেই তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এর আগে মাঠ প্রশাসন প্রস্তুতের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি মাসে ৫০ ডিসিকে নতুন জেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ইতোমধ্যে যোগদান করে কাজ শুরু করেছেন। এ ছাড়া
খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও ময়মনসিংহে নতুন বিভাগীয় কমিশনার নিয়োগ দিয়েছে সরকার। জেলায় খালি থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) পদের তালিকা করা হচ্ছে। খালি থাকা পদে এডিসি দ্রুত নিয়োগ দেওয়া হবে। দীর্ঘদিনের রেওয়াজ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন (ইসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ডিসিদের ওপরই নির্ভর করে আসছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হন ইউএনও। সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট উপহার দিতে নতুন ডিসিদের কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ব্রিফিং সেশনে তাঁদের করণীয় বিষয়ে নানান পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, মাঠপর্যায়ে একটা বড় পরিবর্তন ইতোমধ্যে হয়েছে। যে কারণে প্রশাসনের মধ্যেও কর্মচাঞ্চল্য এসেছে। সবাই এখন নির্বাচনুমখী। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, এখন যে রদবদলটা হচ্ছে বা হয়েছে এটি নির্বাচনকেন্দ্রিক। তফসিল ঘোষণার পর ইসি কোনো ক্ষেত্রে পরিবর্তন করতে চাইলে তারা সেটি করতে পারবে। জানা গেছে, ৩৪, ৩৫ ব্যাচ থেকে যাদের দুই বছর বা কাছাকাছি সময় হয়েছে তাদের ইউএনওর দায়িত্ব থেকে তুলে আনা হচ্ছে। নতুন ব্যাচ হিসেবে মাঠে যাচ্ছে ৩৭তম ব্যাচ। ৩৬ ব্যাচের ইউএনও হিসেবে পদায়ন হয়নি এমন কর্মকর্তারাও এবার যাচ্ছেন মাঠে।
সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘একটা নির্বাচন সবার সহযোগিতায় হয়। চালকের আসনে থাকেন ডিসি-ইউএনওরা।’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানান, নির্বাচন ঘিরে পুলিশ সুপার (এসপি) এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে নিয়োগপ্রত্যাশীদের বাছাইয়ের কাজ চূড়ান্ত। তাঁদের লটারির মাধ্যমে বদলি-পদায়ন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে লটারি করে ৬৪ জেলার এসপি চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় লটারি করে তাঁদের নির্বাচন করা হয়েছে। একাধিক সূত্রে জানা যায়, অতীতে এসপি হিসেবে যাঁরা দায়িত্ব পালন করেছেন তাঁদের বাদ দেওয়া হয়। পুলিশ ক্যাডারের ২৫, ২৭ ও ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে যাচাইবাছাই করে তালিকা করা হয়। সে তালিকায় থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে লটারি করে ৬৪ জনকে নির্বাচন করা হয়েছে। এসপি পদায়ন শেষ হলে ধাপে ধাপে ওসি নিয়োগও লটারির ভিত্তিতে হবে।