নরসিংদীতে ভূমিকম্পের পর এখনো আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের। তৃতীয় দফা ভূমিকম্পের পর থেকে অনেকে ঘরবাড়িতে রাত না কাটিয়ে খোলা ময়দানে অবস্থান করছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মাধবদী ও পলাশের নারী-পুরুষ-শিশু-কিশোরসহ শত শত মানুষ কলেজ মাঠ ও শিল্পাঞ্চল মাঠে রাত কাটাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে তৃতীয় বারের মতো ভূমিকম্পের পর মানুষের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে কোনোদিন রাত ১১টা থেকে ১টার মধ্যে পুনরায় শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে। এ কারণে নরসিংদী শহরের মানুষজন সরকারি কলেজ মাঠ, গাবতলী মাদ্রাসা মাঠ, স্টেডিয়াম এলাকা, ছায়াবীথি এলাকাসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা, ঈদগাহে আশ্রয় নিয়ে থাকছেন। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মাধবদী ও পলাশের মানুষ সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন।
সরেজমিন রাত ১টায় নরসিংদী কলেজ মাঠ ও পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজ মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, পাটির ওপর কম্বল ও বালিশ নিয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুরা অবস্থান করছেন। শত শত লোক ভয়ে আতঙ্কে এভাবে খোলা আকাশের নিচে থাকছেন। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে তাদের ঘরে ফেরানোর চেষ্টা অব্যাত রয়েছে। ভুক্তভোগী সাজু মিয়া বলেন, ‘আবার নাকি একটা বড় ভূমিকম্প হবে? এমন খবরে সরকারি কলেজ এলাকার সব ভবনের মানুষজন কলেজ মাঠে চলে এসেছেন। ভয়ে আমিও পরিবারের সবাইকে নিয়ে চলে এসেছি।’ জনি সাহা বলেন, ‘ভূমিকম্পে যে কাঁপুনি হয়েছে, তাতে খুব ভয় পেয়েছি। ভেবেছি বিল্ডিং পড়ে যাচ্ছিল। আবার হলে আমরা আর বাঁচতাম না। তাই রাতে এখানেই চলে এসেছি।’
এদিকে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ রবিরার এক নোটিসে জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক এলাকার ১১টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলোতে বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ভূমিকম্পের কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলে আমরা জনগণকে জানাতাম। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কিন্তু গুজবে কান দেওয়া যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।