নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা সদরে চিকিৎসার ভয়াবহ অবহেলার অভিযোগে মোর্শেদা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা এবং ক্লিনিকের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এই অভিযান পরিচালনা করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল হাসনাত ক্লিনিকটির অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করেন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে—ক্লিনিকের লাইসেন্স নেই, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক নেই, প্রশিক্ষিত সেবিকা নেই এবং নানারকম অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম রয়েছে। এজন্যই ক্লিনিকটিকে সিলগালা করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত চিকিৎসককে অপারেশন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলার দক্ষিণ পাংখারচর গ্রামের শওকত মোল্যার স্ত্রী বাকপ্রতিবন্ধী সুমি খানমকে গত ২২ নভেম্বর সন্তানসম্ভবা অবস্থায় মোর্শেদা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে সিজারিয়ান অপারেশনে তার একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু অপারেশনের পর থেকেই রোগীর পেট ফুলে যায় এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকরা এটিকে ‘গ্যাসের ব্যথা’ বলে ব্যাখ্যা দিলেও অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
পরে খুলনার এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান—সিজারিয়ান অপারেশনের সময় রোগীর নাড়ি কেটে যায় এবং বিষয়টি গোপন রেখে গজ দিয়ে চেপে সেলাই করা হয়, ফলে পেটে পচন ধরে। এ ঘটনায় ৯ ডিসেম্বর রোগীর স্বজনরা নড়াইল সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেই ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, ঘটনার পূর্ণ তদন্তের পর দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন