রঙিন ডানায় উড়ে বেড়াচ্ছে অসংখ্য প্রজাপতি। বিচিত্র ও মনোমুগ্ধকর রঙে মোহিত করছে দর্শকদের। এসব হরেক রকম প্রজাপতি দেখতে সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন চত্বরে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত প্রজাপতি মেলায় এমন দৃশ্য দেখা যায়।
‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’-স্লোগান নিয়ে আয়োজিত এই মেলা প্রণিবিদ্যা বিভাগের কীটতত্ত্ব শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।
মেলাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস রঙিন সাজে সেজে ওঠে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রজাপতির ছবি সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন টানানো হয়। ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রজাপতি–প্রেমীরা মেলায় ভিড় করেন। তরুণ–তরুণীদের পাশাপাশি শিশু–কিশোরদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের জন্য আয়োজন করা হয় প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রচনা প্রতিযোগিতা ও প্রজাপতির আদলের ঘুড়ি উড়ানো। এছাড়া অনুষ্ঠিত হয় পাপেট শো, বারোয়ারি বিতর্ক এবং প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী। ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র ও প্রজাপতি পার্কে জীবন্ত প্রজাপতি দেখার ব্যবস্থাও রাখা হয়।
এবারের মেলায় প্রকৃতি সংরক্ষণে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. আলী রেজা খানকে দেয়া হয় ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড’। বাটারফ্লাই ইয়াং এনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড পান জাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী নুরে আফসারী, শাহরিয়ার রাব্বি তন্ময়।
এর আগে বেলা ১২টায় মেলার উদ্বোধন করেন জাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
উপাচার্য বলেন, “প্রজাপতিসহ সব প্রাণীর প্রতি মানবিক আচরণ করতে হবে। মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে, আর এসব প্রাণী আমাদের ওপরই নির্ভরশীল। কীটনাশকের বিকল্প টেকসই উপাদান ব্যবহার করলে প্রাণীদের ওপর বিরূপ প্রভাব কমবে।”
মেলার আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রজাপতি শনাক্তে আমরা মলিকুলার ডেটা তৈরি করেছি। বাংলাদেশের মতো সীমাবদ্ধ সম্পদের দেশেও আমরা এটা করতে পেরেছি। আসুন আমরা সচেতন হই, প্রজাপতি ও প্রকৃতিকে ভালোবাসি এবং সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করি।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাকসুর ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু, জিএস মো. মাজহারুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কীটতত্ত্ব শাখার উদ্যোগে ২০১০ সাল থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ব্যতিক্রমী প্রজাপতি মেলা হয়ে আসছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক