‘সাউথ এশিয়া কনকোয়ার্ড, এশিয়া আনলকড, ওয়ার্ল্ড কাপ অ্যাহেড’ লেখা এক বিশাল ব্যানার ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে। এর অর্থ হলো, দক্ষিণ এশিয়া জয় করা হয়েছে। এশিয়ার দুয়ারও খুলে গেছে। সামনে এবার বিশ্বকাপ। মেয়েদের ফুটবলেই স্বপ্ন পূরণের অনেক গল্প আছে। বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটাও পূরণ হতেই পারে। তবে হঠাৎ করেই কি পথ হারিয়েছে বাংলাদেশের নারী ফুটবল! নাকি ইংলিশ কোচ পিটার জেমস বাটলারের অনমনীয় সিদ্ধান্তই সর্বনাশ ডেকে আনছে! গতকাল ত্রিদেশীয় সিরিজে মালয়েশিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরেছেন আফঈদা খন্দকাররা। পিটার বাটলারের হাইলাইন ডিফেন্স নীতিই গোল উপহার দিয়েছে প্রতিপক্ষকে।
ম্যাচের শুরুটা বেশ ভালো করেছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। বল পায়ে রাখছিলেন। আক্রমণও ছিল গোছানো। তবে মালয়েশিয়ার গোলরক্ষক ও অধিনায়ক নুরুল আজুরিন বিনতি মাজলানই বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান। মনিকা, শামসুন্নাহার, মারিয়াদের আক্রমণগুলো বারবারই রুখে দিচ্ছিলেন মাজলান। সপ্তম মিনিটে ডি বক্সের ডান কোন থেকে শামসুন্নাহার জুনিয়রের ক্রসে হেড করার দারুণ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি মনিকা। এরপরের মিনিটেই ঋতুপর্ণার কর্নার কিক থেকে হেডে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। তিনিও ব্যর্থ হন। ম্যাচের ২৯ মিনিটে ভুলের খেসারত দিতে হয় বাংলাদেশকে। পিটার বাটলারের হাইলাইন ডিফেন্স ব্যর্থ হলো মালয়েশিয়ার কাউন্টার আক্রমণ রুখতে। নুর আইনসিয়াহ বিনতি মুরাদ ২৯ মিনিটে বল পেয়েই ডি বক্সের দিকে এগিয়ে যান। রূপনা চাকমা এগিয়ে এসে তাকে বাধা দিতে গিয়েই দলের বিপদ ডেকে আনেন। গোলপোস্ট ফাঁকা পেয়ে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান নুর। রূপনার ভুলটাই সর্বনাশ করে দেয়। পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে তহুরা, সাগরিকা, মামনি, স্বপ্না, জয়নবরা মাঠে নামলে খেলার গতি কিছুটা বাড়ে। ৬৮ মিনিটে বাংলাদেশ সবচেয়ে সহজ সুযোগ পায়। ঋতুপর্ণার ক্রসে ছোট ডি বক্সে বল পান সাগরিকা।
গোলপোস্টের সামনে মালয়েশিয়ার গোলরক্ষক সাগরিকার লাইন থেকে অনেকটা দূরে। তবে জুতসই হেড করতে ব্যর্থ হলেন সাগরিকা। গোলবঞ্চিত বাংলাদেশ। জয়বঞ্চিত বাংলাদেশ!
কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়েই অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার মেয়েদের ফুটবল লড়াই। গতকাল বিকাল হওয়ার আগেই স্টেডিয়াম এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়। স্টেডিয়ামের প্রতিটা গেটেই ছিল নিরাপত্তা প্রহরীদের কড়াকড়ি। বাফুফে গ্যালারির টিকিট বিক্রি করেছে প্রায় ৫ হাজার। এ ছাড়া ছিল কমপ্লিমেন্টারি অনেক টিকিট। গ্যালারি পূর্ণ না হলেও হাজার হাজার দর্শক মেয়েদের খেলা দেখতে এসেছিলেন মাঠে। তারা ম্যাচজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে সমর্থন জুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়েছেন। তবে দর্শকদের জয় উপহার দিতে পারলেন না আফঈদারা। ম্যাচ শেষে ব্যর্থ মনোরথে বাড়ি ফেরেন সমর্থকরা। বাংলাদেশ ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের শেষ ম্যাচে আজারবাইজানের মুখোমুখি হবে ২ ডিসেম্বর।