নওগাঁ প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার। পৌর এলাকার যেখানে-সেখানে ফেলা হয় ময়লা-আবর্জনা। অধিকাংশ ড্রেনে নেই ঢাকনা। আবর্জনার চাপে বন্ধ হয়ে যায় ড্রেনের পানিপ্রবাহ। আবর্জনায় বংশ বিস্তার হয় মশা ও মাছির। পৌরসভার মশকনিধন কার্যক্রমের অভাবে উৎপাত বেড়েছে মশার। দিন দিন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পৌরবাসী।
মশার অত্যাচারে ছেলেমেয়েরা বাসাবাড়িতে এমনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা মনোযোগী হতে পারছে না। বাড়িতে সন্ধ্যার আগেই দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হয়। কয়েল, ধোঁয়া ও স্প্রে কোনো কিছুতে থামানো যাচ্ছে না মশার উপদ্রব। দিনেও মশা থেকে রক্ষা পেতে কয়েল ব্যবহার করতে হয়।
এতে বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণের আশঙ্কা। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পৌরসভার বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, পৌরকর বাড়ানো হলেও তারা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের দাবি, মশক নিধনে প্রশাসনিক এলাকাগুলোতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।
নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, গত ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় ৫৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া অক্টোবরে ১২০ এবং সেপ্টেম্বর আক্রান্ত হয়েছেন ১১৬ জন। সব মিলে চলতি নওগাঁয় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩২১ জন।
শহরের মাস্টারপাড়ার শামিম আনসারী জানান, সন্ধ্যার আগেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। এমন অবস্থা যে, কয়েলের ওপরও মশা ঘোরাঘুরি করে। মশা যেখানে কামড়ায় সেখানে জ্বালাযন্ত্রণা করে ও ফুলে ওঠে। প্রতিদিন কয়েল কিনতে খরচ হয় বাড়তি টাকা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের আশঙ্কা রয়েছে।
শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, মশার উপদ্রব এত বেড়েছে ঠিকমতো পড়াশোনা করা যায় না। কয়েল জ্বালিয়ে মশারির ভিতর বসে পড়তে হচ্ছে। শহরের কোমাইগাড়ী মহল্লার আসফাক উদ্দিন বলেন, বাসা থেকে কিছু দূরে পৌরসভার ময়লার ভাগাড়। এ এলাকায় মশানিধন কার্যক্রম তেমন চোখে পড়ে না। পৌরসভার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মশকনিধন হলেও বাকিগুলোতে কোনো উদ্যোগ নেই। বছর বছর বাড়ানো হয় পৌরকর। অথচ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত পৌরবাসী।
নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মশকনিধনের জন্য তিনটি ফগার মেশিন ও তিনটি হ্যান্ড স্প্রে মেশিন আছে। দুই বছর ধরে পৌরসভায় মশকনিধনের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে পৌর রাজস্ব থেকে নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিটি মহল্লায় পর্যায়ক্রমে ওষুধ ছিটানো হয়। ফগার মেশিনের চেয়ে হ্যান্ড স্প্রেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে মশার লাভা ধ্বংস করা হচ্ছে।