১ লাখ ৮৫ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত জামালগঞ্জ উপজেলাকে বিভক্ত করেছে সুরমা নদী। দুই পাড়ের মানুষকে প্রাত্যহিক প্রয়োজনে এ নদী পারাপার হতে হয়। কিন্তু নদী পারাপারে নৌকাই তাদের একমাত্র ভরসা। এর এক পাশে জামালগঞ্জ, অন্য পাশে সাচনা। প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থী, চিকিৎসাপ্রার্থী, কৃষক, শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে খেয়া পারাপার হন। এভাবে পারাপার যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি সময়সাপেক্ষ। বিশেষ করে বর্ষাকালে নৌকায় নদী পারাপার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে, নৌকাডুবি হয়। হতাহত হয় সাধারণ মানুষ। স্থানীয়রা জানান, সুরমা নদীতে সেতু না থাকায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ থেকে বঞ্চিত এ অঞ্চলের মানুষ। জেলা সদর থেকে গাড়িতে করে সাচনাবাজার গিয়ে শেষ হয়ে গেছে সড়ক পথ। পরে খেয়া পার হয়ে আবারও উঠতে হয় গাড়িতে। খাঁড়া ঢাল বেয়ে মোটরসাইকেল, মালামাল নিয়ে পার হতে হয় খেয়া নৌকায়। এতে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি মানবউন্নয়নের নানা সূচকে পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চল। এ অঞ্চলের ২ লাখের বেশি মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ জন্য সুরমা নদীর ওপর একটি সেতুর দাবি যুগ যুগ ধরে করে আসছেন হাওড় ভাটির সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, এখানে সেতু হলে তা জামালগঞ্জ উপজেলা সদরকে বাণিজ্য কেন্দ্র সাচনাবাজারের সঙ্গে যুক্ত করবে।
উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা জুলফিকার চৌধুরী বলেন, একুশ শতকেও একটি সেতুর অভাবে আমরা পিছিয়ে রয়েছি, এটি শুনতেও লজ্জার। এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে জামালগঞ্জ-সাচনা সেতুর দাবি করে আসছেন। কিন্তু কোনো আমলেই দাবিটি পূরণ হয়নি। উপজেলা সদরের আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, জামালগঞ্জে সুরমা নদীর ওপর সেতু হলে শুধু এ উপজেলার মানুষ না, ধর্মাপাশা উপজেলার মানুষও উপকার পাবেন। ওই উপজেলার মানুষও জামালগঞ্জ হয়ে জেলা সদরে যাতায়াত করেন। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, এখানে একটি সেতুর প্রয়োজন রয়েছে এবং এটি জনগুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে। তবে কাজটি বড় হওয়ায় উদ্যোগ নিতে ও বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।