মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, দেশের ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টির সবচেয়ে বড় উৎস, যার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশই নারীদের জন্য সম্ভাবনা তৈরি করে। একজন নারী উদ্যোক্তা নিজের সঙ্গে আরও কয়েকজন নারীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেন। নারীর আর্থিক শৃঙ্খলার প্রশংসা করে তিনি বলেন, নারীরা ঋণ নিলে তা পরিশোধ করেন- এটা প্রমাণিত সত্য। তাই নারীদের ঋণ সহায়তা বাড়ানো উচিত। আন্তর্জাতিকভাবে সরকারি পর্যায়ে ঝুঁকি মোকাবিলার তহবিল থেকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি বিবেচনায় নারী উদ্যোক্তাসহ সব উদ্যোক্তার জন্য অতিরিক্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, নারী উদ্যোক্তা বৃদ্ধি মানে শুধু সংখ্যা বাড়ানো নয় বরং তাদের দৃশ্যমানতা বাড়ানোই হবে মূল লক্ষ্য। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান- বাংলাদেশ ব্যাংক, এসএমই ফাউন্ডেশন-যদিও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সহায়তা দিচ্ছে, তারপরও জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ নারী হওয়া সত্ত্বেও সুযোগের পরিধি এখনো যথেষ্ট নয়।
কাজেই সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদের সুযোগ নিশ্চিত করার উদ্যোগ তাদেরকেই নিতে হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, ভূমিকম্প বড় আঘাত হয়তো একবার দেয়, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিদিনের সমস্যা। বাংলাদেশ কার্বন নিঃসরণে বড় অবদান না রাখলেও ভুক্তভোগী দেশ হিসেবে আমরা প্রথম সাতটি দেশের একটি। কপ৩০-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ব্রাজিলের বেলেমে জলবায়ু আলোচনায় নারীদের বক্তব্য গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় আসেনি। উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশেও পরিবেশবান্ধব নয় এমন কৃষি ও পশুপালন পদ্ধতিতে কার্বন নিঃসরণ বাড়ছে। তবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে গবাদিপশুর খাদ্যাভ্যাস উন্নয়নের মাধ্যমে মিথেন কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যদিও শিল্পায়িত দেশসমূহের ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইভস্টক প্রোডাকশনের কারণে অধিক হারে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হচ্ছে মৎস্য খাত। এর প্রভাবে নদী ও সাগরে ইলিশের প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি সমুদ্রের বহু এলাকায় অক্সিজেন ঘাটতিজনিত অঞ্চল তৈরি হচ্ছে, যা মৎস্যসম্পদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেও উল্লেখ করেন ফরিদা আখতার।