পুরান ঢাকার আদালতপাড়ায় পার্কিংসংকটে ভোগান্তি চরমে। এখানে রয়েছে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। কিন্তু এখানে নেই পর্যাপ্ত পার্কিংব্যবস্থা। সংশ্লিষ্টদের প্রতিদিনই তীব্র ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। কাকডাকা ভোরে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ছুটে আসেন আদালতে। সকাল ৯টার মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার আইনজীবী, তাদের মহররান, সহকারী ও পিওনসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ আদালতে উপস্থিত হন। দুপুর নাগাদ আদালতপাড়া জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এ সময় আদালতের আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফুটপাত, রাস্তার ধারে কিংবা ভবনের সামনে যত্রতত্রভাবে পার্ক করা মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের কারণে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়।
একজন সিনিয়র আইনজীবী বলেন, পুরান ঢাকার আদালতপাড়া দেশের অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা। এখানে প্রতিদিন লাখো মানুষ যাতায়াত করেন। অথচ এখানে কোনো সুনির্দিষ্ট পার্কিং এলাকা নেই। বাধ্য হয়ে ফুটপাত ও রাস্তায় গাড়ি রাখতে হয়। আদালতের কর্মচারীরা প্রতিদিন পার্কিংসংকটে পড়ছেন। কেউ কেউ জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাড়ি রাখার জায়গা না পেয়ে অনেক দূরে গাড়ি রেখে হেঁটে আদালতে আসেন। এতে কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। ঢাকা আইনজীবী সমিতির কয়েকজন সদস্য জানান, আদালত এলাকায় প্রতিদিন কয়েক হাজার মোটরসাইকেল ও গাড়ি ঢোকে। স্থায়ী পার্কিং স্পেস না থাকায় শৃঙ্খলা রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আদালতের চারপাশে বিক্ষিপ্তভাবে পার্কিং হওয়ায় নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে। চুরি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটছে।
একাধিক সূত্র জানায়, অতীতে পার্কিং সুবিধা সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেওয়া হলেও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দিন দিন পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, আদালত এলাকায় বহুতল পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। আদালত এলাকায় জনসমাগম বেশি। জায়গা সীমিত। তাই আধুনিক বহুতল পার্কিং ব্যবস্থার বিকল্প কিছু নেই। ডিজিটাল পার্কিং সিস্টেম চালু করলে যানজট কমবে। নিরাপত্তাও বাড়বে। তিনি বলেন, আদালতে আসতে সময়ের অর্ধেক চলে যায় যানজটে। গাড়ি পার্ক করতে গিয়ে অনেকে শুনানি মিস করেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, পার্কিং সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে ভবিষ্যতে আদালতপাড়া কার্যত অচল হয়ে পড়বে।