বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আয়োজিত কীটনাশকের ঝুঁকি ও আইনের সঠিক প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, কীটনাশক রাতারাতি বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ব্যবহার কমাতে নিয়ন্ত্রণ, গবেষণা এবং কৃষক পর্যায়ে প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দিতে হবে। আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ দুর্বল। পরিবেশবান্ধব কীটনাশক দামি হওয়ায় কৃষকের নাগালের বাইরে।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে “কীটনাশকের ঝুঁকি মোকাবেলায় আইনের সঠিক প্রয়োগ” শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনা সভায় স্থানীয় কৃষক, কৃষিবিদ, কীটনাশক বাজারজাতকারী, বিপণনকারীসহ সংশ্লিষ্টরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক ড. আব্দুর রহিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলার রিসার্চ, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটর রহমুনা নূরাইন। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাকৃতিক কৃষির সমন্বয়কারী দেলোয়ার জাহান, বারসিক পরিচালক পাভেল পার্থ, সিনজেনটা বাংলাদেশের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ তাহেরুল ইসলাম, সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. আতাউর রহমান প্রমুখ। মতবিনিময়ে সভাপতিত্ব করেন বেলার হেড অব প্রোগ্রামস ফিরোজুল ইসলাম মিলন এবং সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন বেলার প্রোগ্রাম ও ফিল্ড কোঅর্ডিনেটর এএমএম মামুন।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের গবষেণা অনুযায়ী অকৃষি কাজের জন্য প্রতি বছর ০.৬৮৫ শতাংশ হারে আবাদি জমি কমছে। আবার অতিরিক্ত উৎপাদন বৃদ্ধিও জন্য মাত্রাতরিক্তি রসায়নকি সার ও কীটনাশক ব্যবহাররে ফলে দিন দিন আমাদের কৃষি জমিগুলো অর্নুবর হয়ে পড়েছে। জাতসিংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লউিএইচও) আটটি মানদণ্ড অনুযায়ী, দেশে ব্যবহৃত ২৫টি বালাইনাশক বিপজ্জনক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
তারা বলেন, রাসায়নিক কীটনাশক শুধু পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতি করছে না, এর ব্যবহারে উৎপাদন বাড়লেও মাটি, পানি, বাতাস দূষিত হচ্ছে। পোকামাকড় মরে যাবার কারণে হ্রাস পায় জীববৈচিত্র্য। সবচেয়ে মারাত্মক প্রভাব পড়ে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর। এর ফলে ক্যান্সারসহ নানাবিধ রোগ দেখা যায়। এছাড়া পারকিনসন রোগ, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, স্নায়বিক দুর্বলতা প্রভৃতিও হতে পারে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বালাইনাশক (পেস্টিসাইডস) আইন ২০১৮, জাতীয় কৃষি নীতি, ২০১৮, জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ২০২০, জাতীয় জৈব কৃষি নীতি, ২০১৬ কীটনাশক ব্যবহারের নীতিমালা থাকলেও তা প্রতিপালিত হচ্ছে না।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত