দেশজুড়ে শীতের প্রভাব বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে হিমেল হাওয়া জোরে বইছে। সকালে কনকনে ঠান্ডা ও দুপুরে ম্লান রোদের কারণে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ভোগান্তি বাড়ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহীতে শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব বেশি অনুভূত হতে পারে।
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’ এখনো বাংলাদেশের উপকূল থেকে দূরে অবস্থান করছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে ঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সমুদ্রে উত্তাল অবস্থার কারণে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সমুদ্রে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের কাছে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ডিসেম্বর মাসে সমুদ্রের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল থাকে না। তাই বছরের বাকি সময় উপকূলে নতুন কোনো ঝড়ের সম্ভাবনা নেই। তিনি আরও জানান, বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম থাকায় কৃষকরা স্বস্তিতে আছেন; আলু, ভুট্টা, সরিষা, পেঁয়াজ, রসুনসহ শীতকালীন শস্যের রোপণ ইতোমধ্যে গতি পেয়েছে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ইতোমধ্যে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। সকালবেলা হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় সড়কে মানুষের চলাচল কম থাকে। গতকাল রবিবার (৩০ নভেম্বর) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আগের দিনের তুলনায় সামান্য কম।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সকালে বেশিরভাগ ফ্লাইট অন্তত আধা ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে, বারবার সময় পরিবর্তনের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, আকাশ পরিষ্কার হলেই ফ্লাইট স্বাভাবিক হবে; এখনই কোনো ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেই।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস অনুযায়ী, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়টিই হবে এ মৌসুমের সবচেয়ে শীতল পর্ব। মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা কাঁপতে পারে, যা কৃষিকাজ, পরিবহন ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় বাড়াবে ভোগান্তি।
দেশের উত্তরাঞ্চলে ইতোমধ্যে শীতের প্রভাব স্পষ্ট, আর সামনে আরও কঠোর শীতের ইঙ্গিত দিচ্ছে আবহাওয়া।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘শীত ধীরে ধীরে বাড়ছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ