প্রতিদিন সূর্য উদয় হওয়ার সঙ্গে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। এ সময়ে তারা আল্লাহর কাছে দুই ধরনের আর্জি পেশ করেন। দানকারীর জন্য কল্যাণ ও কৃপণের জন্য ধ্বংস কামনা করেন তারা।
হাদিস
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান দিন আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন। (বুখারী ও মুসলিম)।
হাদিসের ব্যাখ্যা
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, প্রতিদিন যেখানে সূর্য উদিত হয় দুজন ফেরেশতা আহ্বান করতে করতে অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! ইবাদত, পরিবার, মেহমান ও নফল কাজে ব্যয়কারীকে প্রতিবিধান করুন এবং সে যা খরচ করেছে তার বিনিময়ে কল্যাণ দান করুন এবং তাকে বরকত দিন।
অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! তাতে ব্যয় না করে সঞ্চয়কারীকে ধ্বংস দিন এবং হকদারকে না দিয়ে যে সম্পদ জমা করে রেখেছে তা ধ্বংস করুন।
হাদীসের শিক্ষা
দানশীল ব্যক্তির জন্য অধিক ক্ষতিপূরণ এবং সে যা ব্যয় করেছে তারচেয়ে উত্তম কিছু পাওয়ার জন্য দোয়া করা জায়েজ এবং কৃপণ ব্যক্তি যে সম্পদ জমা করে কৃপণতা করেছে এবং আল্লাহ যা খরচ করা তার ওপর ওয়াজিব করেছেন তা খরচ না করে জমা করে রেখেছে তা ধ্বংস হওয়ার দোয়া করা বৈধ।
ব্যয়কারী নেককার মুমিনদের জন্য ফেরেশতারা কল্যাণ ও বরকতের দোয়া করেন এবং তাদের দোয়া কবুল হয়।
এখানে ওয়াজিব ও নফল কাজে ব্যয় করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে; যেমন পরিবারের ওপর, আত্মীয়তা রক্ষায় ও কল্যাণকর রাস্তায় ব্যয় করা।
কল্যাণকর কাজে ব্যয়কারীর ফজিলতের বয়ান আর তার শেষ ফল হলো আল্লাহ তার প্রতিবিধান করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা যা কিছুই খরচ করো তিনি তার প্রতিবিধান করেন এবং তিনি সর্বোত্তম রিজিকদাতা। (সূরা সাবা, আয়াত: ৩৯)
আর ফেরেশতার ওই বদদোয়া হলো ওয়াজিব খরচ থেকে বিরত ব্যক্তির ওপর, কিন্তু মুস্তাহাব খরচ তাতে দাখিল হবে না, কারণ সে এই বদদোয়ার উপযুক্ত নয়। এর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে কৃপণতা ও কিপটে হওয়া হারাম।
বিডি প্রতিদিন/কেএইচটি